৯০ দশকের মেলোডি কিং বলে যদি কেউ থাকেন তাহলে তিনি একমাত্র কুমার শানু। তার গান আজও চির নতুন। তবে বাঙালি ছেলে কেদারনাথ ভট্টাচার্য থেকে কুমার শানু হয়ে ওঠার লড়াইটা কিন্তু খুব একটা সহজ ছিল না। কুমার শানু হওয়ার পেছনে রয়েছে এই বাঙালি ছেলের দীর্ঘ স্ট্রাগেলের গল্প। বাবার মৃত্যু দিনেও স্টেজে উঠে মনোরঞ্জন করতে হয়েছিল এই গায়ককে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, যেদিন তাঁর বাবা পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেন সেদিনও স্টেজে উঠে গান গেয়েছেন তিনি। দর্শকদের একের পর এক অনুরোধের গান গাইতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি সেদিন তার এতটাই মানসিক চাপ ছিল যে স্টেজে পড়ে যান তিনি। কিন্তু দর্শকদের কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজের পারফর্মেন্স চালিয়ে গেছেন।
কুমার শানু আরও বলেন, “ওই দুঃখের দিনেই, শো চলাকালীন দর্শকরা মঞ্চে এক ফুল ছুড়েছিলেন যে, তাতে পা পিছলে পড়ে যাই। তবে দর্শকরা তা বুঝতেও পারেননি। আমি তাও গান করে যাই, তাঁরা বুঝতেও পারেননি যে আমি পড়ে গিয়েছি।” শেষে আরও যোগ করেন, “পারফরম্যান্স শেষ করে যখন ব্যাক স্টেজে যাই তখন সবাই দৌঁড়ে আমার কাছে আসে, তবে দর্শকরা টেরও পাননি আমার সঙ্গে কী হয়েছে”।
প্রায় চার দশকের কর্মজীবনে এক বারও জাতীয় পুরস্কার পাননি তিনি নিজে। এই নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “আমার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। আমার পদ্মভূষণও পাওয়া উচিত ছিল। আমি আর এগুলো নিয়ে ভাবি না। যদিও খারাপ তো লাগেই, কষ্ট হয়। তবে আমি এটাও বুঝি যে, সেই রকম তেল দেওয়ার মতো ক্ষমতা না থাকলে এই সব সম্মান পাওয়াও যায় না”।
এখানেই শেষ নয়, ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সরকার যদি কখনও যোগ্য মনে করে আমাকে, তা হলে দেবে। না দিলে আমি কী করব। তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে চললে তবেই এখন পুরস্কার পাওয়া যায়”। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান পেয়েছিলেন গায়ক। তবে কর্মজীবনের শিখরে থাকাকালীনও মেলেনি জাতীয় পুরস্কার।