ঘটনার সময় কলকাতায় ছিলেননা মুনমুন সেন। তবে খবর পেয়েই দিল্লি থেকে ছুটে এসেছেন মুনমুন সেন এবং রাইমা সেন। এদিকে বিমানবন্দরে নামতেই ক্যামেরা ঘিরে ধরে তাঁকে। আর তাতেই বিরক্ত অভিনেত্রী।
মঙ্গলবার সকালে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুনমুন সেনের স্বামী ভরত দেব বর্মা প্রয়াত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। শোকে ভেঙে পড়েছেন তাঁর দুই মেয়ে রিয়া ও রাইমা। বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
জানা গিয়েছে এদিন সকালে থেকেই অস্বস্তি বোধ করছিলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জামাই। এরপর তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই সুযোগ আর পাওয়া যায়নি। নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য।
খবর পেয়েই তড়িঘড়ি মেয়েকে নিয়ে শহরে ফেরেন মুনমুন সেন। কালো রোদচশমায় মুখ ঢেকেছিলেন তিনি। বোঝা যাচ্ছিল নিজের অনুভূতি ক্যামেরার সামনে প্রকাশ করতে চান না তিনি। রেগে গিয়ে মুখ ঘুরিয়ে চলে যান অভিনেত্রী।
এদিন খবর পাওয়া মাত্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছান মুনমুনের বালিগঞ্জের বাড়িতে। সেখানে তিনি বলেন, মুনমুন এখানে নেই। দিল্লিতে আছেন। রাইমাও সেখানেই আছেন। এখানে রিয়া আছেন। বন্ধু, আত্মীয়স্বজনেরাও আছেন। মুনমুন ইন্ডিগোর ফ্লাইটে আসবেন। ও এখানে এলে ওকে গ্রিন করিডর করে নিয়ে আসা হবে। মুনমুনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ও জানত না। ভরতদা খুব ভাল মানুষ ছিলেন। খুব অমায়িক লোক ছিলেন। এটা খুব বড় ক্ষতি। এমন কিছু বয়সও হয়নি তাঁর। আচমকাই মারা গিয়েছেন। ওঁরা বলছে স্ট্রোক হয়ে মারা গিয়েছেন। একজন শুভাকাঙ্ক্ষীকে এবং আমার এক আত্মীয়কে হারালাম। মুনমুন, রাইমা ফিরে আসুক ভালভাবে। আমি লোকাল কাউন্সিলার রাম এবং বাবু বক্সিকে রেখে গেলাম এখানে। দেবাশিস কুমার, মালা রায় সবাইকেই আমি খবর দিয়েছি। পুলিশকেও আমি বলে রেখেছি। বাকি সব ব্যবস্থাই করে রাখা আছে। যদি সুযোগ হয় ও এলে ওর সঙ্গে আমি একবার ফোনে কথা বলে নেব।
১৯৪১ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর জন্ম হয় ইলা দেবী ও ত্রিপুরার মহারাজা রমেন্দ্রকিশোর দেব বর্মার ছেলে ভরতের। তাঁর মা ইলা দেবী ছিলেন কোচবিহারের রাজকুমারী, যার ছোট বোন গায়ত্রী দেবী জয়পুরের মহারানি। দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন ভরত। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত দেব বর্মা পরিবার।
১৯৭৮ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন মুনমুন সেন ও ভরত দেব ভর্মা।খুব ধুমধাম হয়েছিল সেই বিয়েতে। বাংলা বিনোদন জগতের সকলেই প্রায় উপস্থিত ছিলেন। সুচিত্রা সেন নিজে গিয়ে বিয়ের কার্ড দিয়ে এসেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমারের বাড়িতে। শুধু মাত্র ভালো স্বামী নন, তিনি ছিলেন আদর্শ পিতাও। দুই কন্যা রাইমা ও রিয়াকে বুকে আগলে মানুষ করেছেন তিনি। তাঁদের ৪৬ বছরের দাম্পত্যে এদিন ইতি পড়ল।