১৯৩৮ সালের ১৮ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা তথা কাপড় বংশের আরও এক জনপ্রিয় মুখ শশী কাপুর। কাপুর পরিবারে জন্ম হলেও শুরুটা মোটেই মসৃণ ছিল না তাঁর। বরং তাঁর জন্মের আগেই সন্তানের মৃত্যু কামনা করেছিলেন তাঁর মা।
১৯৯৫ সালে একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে এক বিস্ফোরক কাহিনী জানিয়েছিলেন শশী কাপুর। তিনি বলেছিলেন, তার মা চাননি তার জন্ম হোক। তাই গর্ভপাত করাতে চেয়েছিলেন। কারণ তার মায়ের ততক্ষণে দুই ছেলে ছিল। তাই তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিতে চাননি তিনি। সেই কারণে গর্ভপাতের চেষ্টা করেছিলেন।
অভিনেতা আক্ষেপ করে আরো জানিয়েছেন, কখনো সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে আবার কখনো সিঁড়ি থেকে ইচ্ছে করে পড়ে যেতেন তার মা। মাঝেমধ্যে ধরে ধরে লাফ দিতেন। কিন্তু এসব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ করে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জন্ম হয় শশী কাপুরের।
শশী ছিলেন ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক তারকা। ১৯৮২ সালে ছবি নমক হালালের পরের বছর, তাঁর হলিউড ছবি ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’ মুক্তি পায়। ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবেও মনোনীত হয়েছিল। জীবনের নানা ওঠা-পড়াকে সঙ্গী করেই এতটা সফল তিনি। আজও মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন অভিনেতা।১৯৬১ সালে, শশী ধর্মপুত্র চলচ্চিত্রে প্রথমবার প্রধান অভিনেতা হিসেবে বড় পর্দায় আসেন। প্রেমপত্র, চার দিওয়ারি, মেহেন্দি লাগি মেরে হাতের মতো ছবি করার পর শশী কপুরের কেরিয়ারে পতন ঘটে। রোমান্টিক নায়কের চরিত্রে অভিনয় করার কারণে তাঁকে টাইপকাস্ট করা হয়েছিল। যে কারণে তিনি চলচ্চিত্রে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কোনও নায়িকাই তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাননি।
এদিকে, দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৫৯ সালে গেস্ট হাউস ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান শশী। এর পরে, তিনি দুলহা-দুলহান এবং শ্রীমান সত্যবাদী চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। যেখানে প্রধান চরিত্রে ছিলেন তাঁর ভাই রাজ কপুর।
শোনা যায়, বিদেশী অভিনেত্রী জেনিফার কেন্ডেল তাঁকে দেখে প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু, শশী কপুরের নাম জানা ছিল না তাঁর। তাই ভুল জায়গায় ভালবাসা প্রকাশ করে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।জেনিফার ছিলেন শশীর প্রথম ও শেষ প্রেম। বিদেশি হওয়ায় বিয়েতে প্রথম দিকে পরিবার রাজি ছিল না।এরপর অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে বিয়ে হয় শশী এবং জেনিফারের। ২৮ বছর একসঙ্গে সংসার করেছিলেন। এরপরই কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জেনিফার। তখন শশী কপুর নিজেকে সবকিছু থেকে আলাদা করে ফেলেন। জীবনের শেষ ৩১ বছর স্ত্রীর স্মৃতিতে কাটিয়েছেন অভিনেতা। আর বিয়ে করেননি।