নিজের দক্ষতায় ফুটপাথ থেকে আজ রাজপ্রাসাদে উঠে এসেছেন গৌরাঙ্গ চক্রবর্ত্তী ওরফে মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁর অভিনয় নিয়ে কেউ কোনও দিন প্রশ্ন তুলতে পারেনি। কিন্তু একসময় টাকা উপার্জনের জন্য তাঁকেও করতে হয়েছে এই কাজ। যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তাঁর বড় ছেলে মহাক্ষয় চক্রবর্তী ওরফে মিমো। আজ মহাগুরুর জন্মদিনে রইল কিছু অজানা কাহিনী।
স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে অনার্স নিয়ে বিএসসি পাশ করেন মিঠুন চক্রবর্তী। এরপর তিনি পড়াশোনা করতে চলে যান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ায়। কিন্তু হঠাৎ করেই সংসারের হাল ধরতে, আন্দোলন ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয় মিঠুনকে। সেসময়ে তাঁরও জীবনের ঝুঁকি ছিল। ধীরে ধীরে মিঠুনের জীবন মোড় নেয় অন্যদিকে।
এরপর ১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের পরিচালনায় মৃগয়া ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। জিতে নেন সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার। এরপর মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ না পেয়ে কার্যত হারিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এরপরে, তাঁকে খ্যাতির আলোয় নিয়ে এল ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবিটি। শুধু অভিনয় নয়, মিঠুন পরিচিত হলেন এক দুর্দান্ত নৃত্যশিল্পী হিসেবেও।
ব্যক্তিগত জীবনে, অভিনেত্রী যোগীতা বালির সঙ্গে বিয়ে হয় মিঠুনের। তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। শোনা যায়, একসময় শ্রীদেবীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মিঠুনের। সেই সম্পর্ক এগিয়েছিল এতটাই যে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে একথাও ভাসে যে গোপনে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শ্রীদেবী যখন বুঝতে পারেন মিঠুন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চান না, সম্পর্ক থেকে সরে আসেন শ্রীদেবী।
২০০০-এর শুরুতে খানিকটা এলোমেলো হয়ে যায় মিঠুন চক্রবর্তীর কেরিয়ার। অভিনয় করেন বেশ কিছু বি-গ্রেড ছবিতে। এই প্রসঙ্গে মিমো জানান, “পয়সার জন্য করতে বাধ্য হয়েছে বাবা। তবে এমনটা তো নয় ওই সব প্রযোজকরা ক্ষতির মুখ দেখছিলেন। ৭০ লক্ষ খরচ করলে তাঁরা পরিবর্তে এক কোটি পাচ্ছিল। এখনও তো বাবা ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এ কাজ করছেন। উনি যা করেন, তা সব সময় আমাদের জন্যই করেন। আমার খুব গর্ব হচ্ছে বলতে, তাঁর প্রথম ও শেষ চিন্তা শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র পরিবারকে ঘিরেই”।
যদিও এই প্রসঙ্গে তাঁর ছোট ছেলে জানিয়েছিলেন, “গুন্ডার’ মতো ছবিতে অভিনয় করা তাঁর মোটেও উচিৎ হয়নি। যে ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বাবা, তা মোটেও তাঁর যোগ্য ছিল না।” যদিও ছোট ভাইয়ের এই মতের সঙ্গে সম্মতি পোষণ করেননি মিমো।
মিমো আরও জানান, “আমাদের মা আমাদের থেকে বাবার পতন অনেক বেশি দেখেছে। আমরা ছোট ছিলাম। বাবা ছিলেন সুপারস্টার। মা বলতেন, যখনই তাঁর ছবি ফ্লপ হতো, তখনই নাকি হতাশায় ডুবে যেতেন বাবা।”