সব সময় দর্শকদের হাসিয়ে বাজিমাত করেন রাজপাল যাদব। কিন্তু এ হেন অভিনেতার জীবনেও রয়েছে এক অন্ধকার অধ্যায়। কঠিন লড়াইয়ের পাশাপাশি এক মর্মান্তিক কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে অভিনেতার জীবনের সঙ্গে। অভিনেতা এবার নিজেই প্রকাশ্যে এনেছেন সেই কাহিনী।
অনেক ছোট বয়সে বিয়ে হয় রাজপাল যাদবের। সে সময় একটি কাপড়ের কারখানায় কাজ করতেন তিনি। বিয়ের কিছুদিন পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তার স্ত্রী। ঠিক হয় যখন তাদের সন্তান ভূমিষ্ঠ হবেন তখন স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। কিন্তু সেই ইচ্ছে আর পূরণ হয় না। এর মধ্যেই ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা।
১৯৯১সাল। শহর থেকে দূরে গিয়ে কাপড়ের কারখানায় সবে কাজ নিয়েছেন। একটু সুদিন দেখার আশায় দিনরাত খাটছেন তখন রাজপাল। এর মধ্যেই স্ত্রীর প্রসব করার খবর আসে তার কাছে। ছুটে যান স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু গিয়ে জানতে পারেন সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তার স্ত্রীয়ের। মাত্র কুড়ি বছর বয়সেই স্ত্রীকে হারান তিনি। এরপর একদিনের শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে আসেন। নিজেই দাহ করেন মৃত স্ত্রীকে।
রাজপালের কথায়, ‘‘ওই বয়সে আবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। কষ্ট করে একটা চাকরি জুটিয়েছিলাম কাপড়ের কারখানায়। ভেবেছিলাম সুখের সংসার হবে। সন্তানের জন্ম দিতে স্ত্রী গিয়ে মারা গেল। এক দিন পরেই ওঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়ে উঠল না। কী কপাল!’’
এরপরেই শুরু হয় তার অভিনেতা হওয়ার লড়াই। ভর্তি হন ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা’ স্কুলে। তার পর একাধিক টিভি শো-তে কাজ করেন রাজপাল। অবশেষে ২০০০ সালে বড় পর্দায় অভিষেক ‘জঙ্গল’ ছবির মাধ্যমে। অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সময় লেগে যায় প্রায় ১৩ বছর।
এরপর এক ছবির শুটিং করতে গিয়ে দেখা হয় তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাধার সঙ্গে। দুই পরিবারের সম্মতিতে ৩১ বছর বয়সে পুনরায় বিবাহ করেন তিনি। অভিনেতা জানান, “রাধা আমার বড় মেয়েকেও ভীষণ ভালবাসে আর ওকে বড় করে তোলায় ওর অনেক ভূমিকা রয়েছে”।